১৯ বছর পর ডুরান্ড ফাইনালে খেলার হাতছানি, তার আগে সেমির লড়াইয়ে নর্থইস্টকে বাড়তি সমীহ করছেন ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ


এবারের ডুরান্ড কাপের শুরুটা একেবারেই প্রত্যাশিত ভাবে করতে পারেনি ইস্টবেঙ্গল। সত্যি কথা বলতে, ডুরান্ড কাপের আগে লাল-হলুদকে নিয়ে কারও সে ভাবে প্রত্যাশাও ছিল না। কিন্তু ডার্বি জয়ের পরেই ইস্টবেঙ্গলের বডিল্যাঙ্গোয়েজই কার্যত বদলে গিয়েছে।

প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ সেনা দলের বিরুদ্ধে ২ গোলে এগিয়ে, ২-২ ড্র করে চাপে পড়ে গিয়েছিল লাল-হলুদ। তবে ডার্বি জেতার পর গ্রুপের শেষ ম্যাচে তারা পঞ্জাব এফসি-কেও হারায়। শীর্ষে থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছয় ইস্টবেঙ্গল।শেষ আটের লড়াইয়ে গোকুলম কেরালা এফসি-কে হারিয়ে সেমিফাইনালে জায়গা করে নেন কার্লেস কুয়াদ্রাতের ছেলেরা। আর মঙ্গলবার সেমিফাইনালে নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড এফসি-র বিরুদ্ধে খেলতে নামবে লাল-হলুদ। এই ম্যাচ জিতলেই দীর্ঘ দিন পর কোনও সর্বভারতীয় টুর্নামেন্টের ফাইনালে পৌঁছবে ইস্টবেঙ্গল। আর দীর্ঘ ১৯ বছর পর ডুরান্ড কাপের ফাইনালে খেলার যোগ্যতা অর্জন করবে লাল-হলুদ।

চার বছর আগে, ২০১৯-এ গোকুলাম কেরালা এফসি-র কাছে টাই ব্রেকারে হেরে সেমিফাইনাল থেকে ছিটকে যেতে হয়েছিল ইস্টবেঙ্গলকে। এ বার সেই গোকুলামকে কোয়ার্টারেই বধ করেছে। এবার নর্থ-ইস্টকে ল্যাজেগোবরে করার অপেক্ষা। নতুন মরশুমের শুরু থেকে অপরাজিত থাকা দলকে অবশ্য সমীহই করছেন কুয়াদ্রাত।

লাল-হলুদের প্রধান কোচ কুয়াদ্রাত তাই কিছুটা সতর্কতার সুরে বলেছেন, ‘গোকুলমের বিরুদ্ধে কোয়ার্টার ফাইনালে কঠিন লড়াই করে আমরা সেমিফাইনালে উঠেছি। এই টুর্নামেন্টে নর্থ-ইস্ট ইউনাইটেড এখনও পর্যন্ত অপরাজিত। ওদের দলে তরুণ ও অভিজ্ঞ ফুটবলারদের সংমিশ্রণ ভালো আছে। ওদের দল খুব ভালো লড়াই করতে পারে। এই ম্যাচ আমাদের জন্য কঠিন হতে চলেছে।’

নর্থ-ইস্টকে সমীহ না করে অবশ্য কোনও উপায় নেই। ডুরান্ডে দুরন্ত ছন্দে রয়েছে তারা। গ্রুপ পর্বে শিলং লাজং এফসি-কে ৪-০-য় হারিয়ে রীতিমতো অভিযান শুরু করেছিল নর্থইস্ট। অপর সেমিফাইনালিস্ট এফসি গোয়ার বিরুদ্ধেও ২-২ ড্র করে তারা। এবং শেষে ডাউনটাউন হিরোজকে ৩-১-এ হারিয়ে শেষ আটে ওঠে নর্থ-ইস্ট। কোয়ার্টারে তারা আবার ভারতীয় সেনা দলকে ১-০-তে হারিয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১০ গোল দিয়ে তিন গোল খেয়েছে নর্থ-ইস্ট। ৪-২-৩-১-এ দল সাজিয়ে আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলাতে পছন্দ করেন ৫৪ বছর বয়সী স্প্যানিশ কোচ জুয়ান পেদ্রো বেনালির দল।

এবারের ইস্টবেঙ্গল দলে আবার ক্লেটন সিলভা ছাড়া বাকি ৫ জন বিদেশি ফুটবলারই নতুন। তবে দলের সঙ্গে ভালো ভাবে মানিয়ে নিয়েছেন বোরহা হেরেরা, সিভেরিও, এলসে, ক্রেসপো, পার্দো লুকাসরা। নন্দকুমার শেখর, প্রভসুখন গিল, নিশু কুমার, মন্দার রাও দেশাই, এডউইনরাও ভালো পারফরম্যান্স করছেন। কোচের গেম রিডিং, ফুটবলার পরিবর্তন কার্যকর হচ্ছে। ফলে লাল-হলুদ শিবির এখন বেশ চনমনে।

তবে নর্থ-ইস্ট এখনও পর্যন্ত সব ম্যাচই গুয়াহাটিতে খেলেছে। ডুরান্ডে প্রথম বার তারা খেলতে নামছে কলকাতায়। যেটা পাহাড়ি দলটির কাছে কিন্তু বড় চ্যালেঞ্জ। নর্থইস্টের কোচ জুয়ান পেদ্রো বেনালি বলেছেন, ‘সেমিফাইনালকে অন্য কোনও ম্যাচের সঙ্গে গুলিয়ে ফেললে হবে না। ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ওদের ঘরের মাঠে খেলছি। সব পজিশনে ওদের ফুটবলার রয়েছে। রিজার্ভ বেঞ্চও শক্তিশালী। কিন্তু আমরা উত্তর-পূর্বের প্রতিনিধি হিসাবে এখানে খেলতে এসেছি। সমর্থকেরা আমাদের উপর আস্থা রেখেছেন। আমরা ওদের গর্বিত করতে চাই।’



Source link

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*