মোবাইলে নীরজের ভিডিয়ো দেখতেন আরশাদ, গল্প করতেন ভারতীয় তারকাকে নিয়ে- এমনটাই দাবি নাদিমের রাজমিস্ত্রি বাবার – Arshad Nadeem keeps watching videos of Neeraj Chopra on mobile


সোমবার সকালে যখন বুদাপেস্টে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পাকিস্তানের জ্যাভলিন থ্রোয়ার আরশাদ নাদিমের ঐতিহাসিক রুপো জয়ের খবরে যখন সকলে উচ্ছ্বাসে ভাসছে, তখন আরশাদের বাবা মহম্মদ আশরাফ পাকিস্তানের খানেওয়াল জেলার মিয়া চান্নু শহরে রাজমিস্ত্রি হিসেবে দিন শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

সাত সন্তানের বাবা আরশাফ তাঁর পরিবার নিয়ে কোনও মতে তিন ঘরের একটি বাড়িতে থাকেন। আরশাদের পারিবারিক অবস্থা একেবারেই ভালো নয়। অনেক লড়াই করেই তাঁকে খেলা চালিয়ে যেতে হয়।

মিয়া চান্নুতে বসেই ফোনে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে আশরাফ বলেছেন, ‘কাল রাতে আরশাদের লড়াই দেখছিল আমাদের পুরো গ্রাম। আমি সহ প্রায় সবাই জানত যে, প্রত্যেককে সকালে কাজে যেতে হবে, কিন্তু আমি আমার ছেলেকে বিশ্বস্তরে পদক জিততে দেখার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইনি।’

রবিবার রাতে, প্রতিবেশীরা একটি এলসিডি ভাড়া করে এনেছিল। এবং এটি শহরের একটি বড় জায়গায় লাগানো হয়েছিল। যেখানে বসে ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ আরশাদের লড়াই দেখেছিলেন। আশরাফ বলেছেন, ‘আমি থ্রো বা এই সব কিছু বুঝতামই না। কিন্তু ইভেন্টের পরে যখন আরশাদকে পদক দেওয়া হয়েছিল, আমি বুঝেছিলাম যে, ও বিশ্ব পর্যায়ে বড় কিছু করেছে।’

তিনি আরও যোগ করেছেন, ‘ও আমাদের গ্রামের পাশাপাশি পাকিস্তান এবং এশিয়া মহাদেশকে গর্বিত করেছে। ও যখন পদক জেতে, তখন ওর ভাই-বোনরা উল্লাস করছিল। ভারতের যে ছেলেটি সোনা জিতেছে, আরশাদ যখনই বাড়িতে থাকে প্রায়ই ওকে নিয়ে কথা বলে।’

আরশাদ যখন ছোট ছিলেন, তখন প্রায়ই গ্রামবাসীকে তাঁর গ্রামে নেজাবাজি বা বা অশ্বারোহীরা খেলেন, এরকম ধরনের প্রতিযোগিতায দেখতেন। জ্যাভলিনে যাওয়ার আগে তিনি কিছু সময়ের জন্য টেপ-বল ক্রিকেটও খেলেছেন। গত বছর বার্মিংহ্যাম কমনওয়েলথ গেমসে তিনি ৯০.১৮ মিটার থ্রো করে সোনা জিতেছিলেন। এর পরে কনুই এবং কাঁধের চোটের কারণে তাঁকে ভুগতে হয়।

আশরাফ বলেছিলেন, ‘চোট পেয়ে যখন ও বাড়িতে থাকত, তখন জ্যাভলিন এবং নেজাবাজির মধ্যে মিল সম্পর্কে কথা বলত। ও আমাদের বলত যে, এটি নেজাবাজির মতোই অনেকটা। জ্যাভলিনেও সঠিক কোণ এবং বেগ অর্জন করতে হয়। ও প্রায়ই ইউটিউব ভিডিয়ো দেখত এবং আমরা ভারতের ছেলেটিকে ওর মোবাইল ফোনে দেখতাম।’

আরশাদকে যে কতটা কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, সেই নিয়ে তাঁর বাবা বলেছেন, ‘আমরা এমন দিনও দেখেছি, যখন আমি দিনে ৩০০-৪০০ টাকা আয় করতাম এবং আমাকে বাড়িতে ন’জন ছিল, তাদের নিয়েই সংসার চালাতে হত। তার পরেও আমরা নজর রেখেছি যাতে আরশাদ আর ওর ভাইবোনরা দুধ এবং ঘি যাতে পায়। এমন কী এখন, যখন ও বিশ্ব পদক জিতে গ্রামে ফিরবে, তখন ও এক গ্লাস দুধ এবং দেশি ঘি দিয়ে তৈরি খাবার খেতে চাইবে।’

আরশাদের পরিবার দেশভাগের সময়ে ভারতের পঞ্জাবের ফিরোজপুর জেলার একটি গ্রাম থেকে মিয়া চান্নুতে চলে আসে। তাই ভারত আর নীরজের প্রতি আরশাদের তাই আলাদা ভালো লাগা বোধহয় কাজ করে।



Source link

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*