চুমুকাণ্ডের খলনায়ক রুবিয়ালসকে সমর্থন করে চাকরি হারালেন স্পেনের বিশ্বকাপজয়ী কোচ জর্জ ভিলদা


বর্তমানে চুমুকাণ্ডে সমালোচিত স্পেন ফুটবল ফেডারেশন (আরএফইএফ)। এর মাঝেই স্পেন ফুটবল ফেডারেশনের প্রধান লুইস রুবিয়ালেসকে সমর্থন করে চাকরি হারালেন স্পেনের বিশ্বকাপজয়ী কোচ জর্জ ভিলদা। রুবিয়ালেসের পাশে দাঁড়ানোর কারণেই নাকি শেষ পর্যন্ত চাকরি গেল ভিলদার। লুইস রুবিয়ালেসের চুমুকাণ্ডের মধ্যেই দেশের মহিলা ফুটবলারদের দাবি মেনে নিল স্পেনের ফুটবল সংস্থা। আসলে স্পেনের মহিলা ফুটবল দলকে বিশ্বসেরা করেও চাকরি বাঁচাতে পারলেন না দলের কোচ জর্জ ভিলদা। বিশ্বকাপ ফাইনাল জেতার দু’সপ্তাহের মাথায় চাকরি খোয়ালেন দলের কোচ ভিলদা। এক বিবৃতিতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে স্প্যানিশ ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা।

ঘটনার শুরু হয়েছিল স্পেনের মহিলা দলের বিশ্বকাপ জেতার পর। মেয়েদের বিশ্বকাপে পুরস্কার বিতরণীর মঞ্চে স্পেনের ফরোয়ার্ড জেনিফার হারমোসোকে ঠোঁটে চুমু দিয়ে বিতর্কের জন্ম দেন রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের (আরএফইএফ) সভাপতি লুইস রুবিয়ালেস। সেই ঘটনায় বিশ্বজুড়ে শুরু হয় সমালোচনা। দেশটির প্রধানমন্ত্রীও পদত্যাগ করতে আহ্বান জানিয়েছিলেন রুবিয়ালেসকে। কিন্তু ভিলদা তার পাশে থাকার প্রত্যয় জানান। আন্তর্জাতিক ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা রুবিয়ালেসের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। এরপরে আরএফইএফ- এর অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতির দায়িত্ব নেন পেদ্রো রোকা। তিনি রয়্যাল স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশনের অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি হিসেবে ৯০ দিন দায়িত্ব পালন করবেন।

গত ২০ অগস্টে মেয়েদের বিশ্বকাপের ফাইনালে রুবিয়ালেসের আচরণে বিরক্ত হয়েছিল ফিফা। একটি তদন্ত করে ফিফা রুবিয়ালেসকে ৯০ দিনের জন্য বহিষ্কার করেছে। দায়িত্ব দেওয়া হয় পেদ্রো রোকাকে। তাঁর নেতৃত্বাধীন নবগঠিত বোর্ড ৪২ বছর বয়সি ভিলদাকে ছাঁটাই করা হয়। বিবৃতিতে আরএফইএফ জানিয়েছে, ‘আমরা তাঁর (ভিলদা) অনবদ্য ব্যক্তিত্ব ও খেলা পরিচালনার দক্ষতাকে সম্মান জানাই, যা স্পেন মহিলা দলের উন্নতিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। আমরা তাঁর অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি।’ ২০১৫ সালে স্পেনের মহিলা দলের দায়িত্ব নিয়েছিলেন ভিলদা। দলের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সাফল্যের সঙ্গে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। সদ্য সমাপ্ত মহিলা বিশ্বকাপে তাঁর কোচিংয়েই ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জেতে স্পেন।

তবে জানা গিয়েছে প্রায় এক বছর ধরে ভিলদাকে কোচের পদ থেকে সরানোর দাবিতে সরব ছিলেন স্পেনের মহিলা ফুটবলারেরা। কিন্তু ফুটবল সংস্থার সভাপতি রুবিয়ালেসের ঘনিষ্ঠ ভিলদার বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ নেয়নি ফুটবল কর্তারা। চুমুকাণ্ডের জন্য ফিফা রুবিয়ালেসকে তিন মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এরপরেই স্পেনের ফুটবল কর্তারা ভিলদাকেও সরিয়ে দিলেন। স্পেনের ফুটবল সংস্থার অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতি পেদ্রো রোকা মঙ্গলবার এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।

উল্লেখ্য, রুবিয়ালেস পদত্যাগ করবেন না জানানোর পর স্পেনের ৮২ জন মহিলা ফুটবলার প্রতিবাদ জানান, তাঁরা জাতীয় দলের হয়ে খেলবেন না বলে জানিয়ে দেন। তার পরই ভিলদা বাদে বাকি কোচিং স্টাফেরা পদত্যাগ করেছিলেন। জানা গিয়েছিল মহিলা দলের ফুটবলারদের সঙ্গে ভিলদার সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত শীতল। টবলারেরা প্রায় কেউই তাঁর সঙ্গে কথা বলতেন না। বিশ্বকাপ জয়ের পরেও কোচ বাদ দিয়েই উচ্ছ্বাস, উৎসবে মেতেছিলেন তাঁরা। স্পেনের প্রথম সারির একাধিক মহিলা ফুটবলার (কমপক্ষে ১৫ জন) ভিলদার কোচিংয়ে খেলতে অস্বীকার করেন। তাঁরা বিশ্বকাপের আগেই জাতীয় দল থেকে নিজেদের সরিয়ে নিয়েছিলেন। মহিলাদের বিশ্বকাপ ফাইনালের পর থেকে চুমুকাণ্ডে জর্জরিত স্পেনের ফুটবল। অভিযুক্ত ফুটবল সংস্থার প্রধান রুবিয়ালেস। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্পেনের ফুটবল সংস্থা মহিলাদের ফুটবলে ব্যাপক রদবদল শুরু করেছে। তারই অংশ হিসাবে ছেঁটে ফেলা হল বিশ্বজয়ী কোচকে।



Source link

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*