
জাতীয় দল বনাম ক্লাব ফুটবল নিয়ে তীব্র বিবাদ চলছে ভারতীয় ফুটবলে। যার জেরে এবার এশিয়ান গেমসে দল গড়তে গিয়ে কার্যত মাথায় হাত ইগর স্টিম্যাচের। অথচ এই এশিয়ান গেমসে দল পাঠানো নিয়ে রীতিমতো যুদ্ধ চলেছে। ক্রীড়ামন্ত্রককে অনেক বুঝিয়ে এশিয়ান গেমসে দল পাঠানোর জন্য রাজি করিয়েছিল ফেডারেশন। কিন্তু এখন সেই টুর্নামেন্টের দল গড়তে গিয়ে কেঁদে ফেলার দশা ফেডারেশনের।
ভারতীয় ক্রীড়ামন্ত্রকের নিয়ম অনুযায়ী দলগত বিভাগে সুযোগ পেতে এশিয়ার মধ্যে প্রথম আটে থাকতে হবে। কিন্তু ভারতীয় ফুটবল দল ছিল ১৮ নম্বরে। একই নিয়মে ২০১৮ এশিয়ান গেমসেও খেলতে পারেনি ভারত। তবে গত এক বছর ধরে ভারতীয় ফুটবলের অনবদ্য পারফরম্যান্স দেখার পরে নরম হয় ক্রীড়মন্ত্রক। সুনীল ছেত্রীরা পরপর তিনটি আন্তর্জাতিক ট্রফিও জিতেছিলেন। সব মিলিয়ে ক্রীড়ামন্ত্রকের উপর চাপও বাড়ছিল। ভারতীয় দলের হেড কোচ ইগর স্টিমাচ খোদ প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন। ফেডারেনশন কর্তাদের তৎপরতায় অবশেষে এশিয়ান গেমসের জন্য ছাড়পত্র পায় ভারতীয় ফুটবল দল।
নিয়ম অনুযায়ী, এশিয়ান গেমসে অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবলারদের খেলার কথা। তবে তিন জন ২৩ বছরের বেশি সিনিয়র ফুটবলারকে দলে রাখা যায়। যেমন নিয়ম রয়েছে অলিম্পিক্সে। এই তিন জন সিনিয়র ফুটবলার হিসেবে ফেডারেশন এবং স্টিম্যাচ দলে নেওয়ার কথা ভেবেছিলেন সুনীল ছেত্রী, সন্দেশ ঝিঙ্গান এবং গোলকিপার গুরপ্রীত সিং সান্ধুকে। সুনীলকে অধিনায়ক করেই দল গঠনের ভাবনা ছিল ইগরের। কিন্তু ক্লাব বনাম দেশ যুদ্ধে সব পরিকল্পনাই কার্যত ভেস্তে যেতে বসেছে।
আসলে ক’দিন আগেই প্রকাশিত হয়েছে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের সূচি। এশিয়ান গেমসের সময় চলবে আইএসএলও। তাই ভরা মরশুমে ফুটবলার ছাড়া নিয়ে তৈরি হয়েছে জটিলতা। জানা গিয়েছে, সুনীল, সন্দেশ এবং গুরপ্রীতকে ছাড়তে রাজি হচ্ছে না তাঁদের ক্লাব টিম। সেই কারণে সুনীল ছেত্রীদের আর এশিয়ান গেমসে পাওয়া যাবে না।
ফেডারেশন অবশ্য অনেক চেষ্টা চালাচ্ছে। এমন কী আইএসএল পিছানোর অনুরোধও করেছিল এআইএফএফ। শোনা যাচ্ছে, সমস্যার সমাধান খুঁজতে এক্সিকিউটিভ কমিটি জরুরি ভিত্তিতে একটি ভার্চুয়াল মিটিংও করেছে। তবে সুনীলদের ছাড়াই তৈরি করা হচ্ছে এশিয়ান গেমসের টিম। ক্লাবগুলির যুক্তি, এশিয়ান গেমস ফিফার আন্তর্জাতিক ম্যাচের আওতায় পড়ে না। আর এই টুর্নামেন্টের জন্য ক্যালেন্ডারে আগে থেকে নির্দিষ্ট করে কিছু বলাও ছিল না। তাই তারা ফুটবলার ছাড়তে বাধ্য নয়।
Leave a Reply