ইস্টবেঙ্গলের বিতাড়িত কোচই চ্যালেঞ্জ নিয়ে পাকিস্তান ফুটবলে লিখলেন নতুন ইতিহাস


নতুন দায়িত্ব পেয়ে একশো শতাংশ সফল ইস্টবেঙ্গলের বাতিল কোচ স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইন। ভারতের পড়শি দেশকে এনে দিলেন বড় সাফল্য। ব্রিটিশ কোচ পাকিস্তানের সিনিয়র ফুটবল দলের দায়িত্ব নিয়েই চমকে দিলেন। বড় সাফল্য পেল পাকিস্তান। বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের ম্যাচে ঘরের মাঠে কম্বোডিয়াকে ১-০ হারিয়েছে পাকিস্তান। এই প্রথম বার বিশ্বকাপের বাছাই পর্বের কোনও ম্যাচ জিতল তারা।

২০১৮ সালের পর থেকে পাকিস্তান ফুটবল টিম কোনও ম্যাচই জিততে পারেনি। পাঁচ বছর পরে কোনও ম্যাচ জিতল তারা। সেই ম্যাচ আবার বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের। মোদ্দা কথা, কনস্ট্যান্টাইনের হাত ধরে ইতিহাস লিখল পাকিস্তান ফুটবল টিম।

কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে ফিফা বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের ম্যাচের জন্যই পাকিস্তান কোচ করে কনস্ট্যান্টাইনকে। কম্বোডিয়ার বিরুদ্ধে অ্যাওয়ে ম্যাচটি ০-০ ড্র হয়েছিল। তবে ঘরের মাঠে কনস্ট্যান্টাইনের স্ট্র্যাটেজিতে দুরন্ত পারফরম্যান্স করে পাকিস্তান। এবং সেই ম্যাচে হারুন হামিদের একমাত্র গোলে জয় ছিনিয়ে নেয় ভারতের পড়শি দেশ।

আরও পড়ুন: একাদশে ফিরেই জোড়া গোল মেসির, ভাঙলেন বন্ধু সুয়ারেজের রেকর্ড, পেরুকে ২-০ হারাল আর্জেন্তিনা

২০১৫ সালের পর থেকে এই প্রথম পাকিস্তানে কোনও ফুটবল ম্যাচ হল। আর সেই ম্যাচেই জিতল তারা। স্বাভাবিক ভাবেই কৃতিত্বটা ষোল আনা বর্তায় কনস্ট্যান্টাইনের উপরেই। ফিফা ক্রমতালিকায় ১৯৭ নম্বরে রয়েছে পাকিস্তান। তাদের কাছে এই জয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কম্বোডিয়াকে হারিয়ে যোগ্যতা অর্জন পর্বের দ্বিতীয় পর্বে গেল পাকিস্তান। সেখানে আরও ন’টি দল রয়েছে।

একটা সময়ে কনস্ট্যান্টাইনের হাত ধরেই ভারতীয় ফুটবলে সাফল্যের জোয়ার এসেছিল। দু’দফায় ভারতের জাতীয় দলকে কোচিং করিয়েছেন স্টিফেন কনস্ট্যানটাইন। প্রথম বার কোচ হয়ে আসেন ২০০২-এ। ২০০৫ পর্যন্ত তিনি জাতীয় দলের কোচ ছিলেন তিনি। সে সময় তাঁর অধীনে ভারতীয় দল খুব একটা সাফল্যের মুখ দেখেনি। জিতেছিল শুধু এলজি কাপ। এর পর ২০১৫ সালে ফের ভারতে প্রত্যাবর্তন করেন। তখন তিনি বহু সাফল্য পান।

অর্থাৎ পাকিস্তানকে নিয়ে মোট ১০টি দল এবার নিজেদের মধ্যে হোম-অ্যাওয়ে ফরম্যাটে খেলবে। বিশ্বকাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে নভেম্বরে সৌদি আরব, তাজিকিস্তান জর্ডনের বিরুদ্ধে খেলবে পাকিস্তান। তার আগে এই জয় তাদের আত্মবিশ্বাস জোগাবে।

আরও পড়ুন: চোট পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে মাঠ ছাড়লেন নেইমার, ভাঙল ব্রাজিলের অপরাজিত থাকার রেকর্ড, ২-০ জিতে ৪০ বছর আগের নজির ছুঁল উরুগুয়ে

দ্বিতীয় বার বহু তরুণ প্লেয়ারকে সুযোগ দেন কনস্ট্যান্টাইন। আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলার মানসিকতা ভারতীয় প্লেয়ারদের মধ্যে তৈরি করেন। তাঁর অধীনে থাকার সময়ে ২০১৮-র ডিসেম্বরে ভারত ফিফা র‌্যাঙ্কিংয়ে প্রথম একশোর মধ্যে চলে আসে। এ ছাড়াও কনস্ট্যানটাইনের কোচিংয়ে সাফ কাপ জেতে ভারত। ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ জেতে এবং এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন করে। অল্পের জন্য এশিয়ান কাপের গ্রুপ পর্ব পেরোতে পারেনি ভারত।

পাকিস্তানকেও কার্যত অন্ধকার থেকে আলোতে ফেরালেন কনস্ট্যান্টাইন। গত চার বছর দু’বার ফিফা সাসপেন্ড করেছে পাকিস্তান ফুটবলকে। শেষ বার ১৫ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল। ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে সেই শাস্তি শেষ হয়। কয়েক মাস আগে সাফ কাপে ভারতে এসে হারে পাকিস্তান। তার পরেই কনস্ট্যান্টাইনকে পাকিস্তানের কোচ করা হয়।

গত মরশুমে স্টিফেন কনস্ট্যান্টাইনকে কোন করেছিল ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু গোটা মরশুমে ইস্টবেঙ্গলের খারাপ পারফরম্যান্স, ক্লাব নিয়ে কোচের বিতর্কিত মন্তব্য, সমর্থকদের কোচের বিরুদ্ধে চলে যাওয়া, ক্লাবেরও বিরূপ মনোভাব- সব মিলিয়েই নতুন মরশুমে লাল-হলুদ কনস্ট্যান্টাইনকে বিদায় জানিয়ে তাঁর বদলি খুঁজে নেয়। এর পর থেকে ফাঁকাই বসেছিলেন ব্রিটিশ কোচ। পাকিস্তানের প্রস্তাব পেয়ে, নতুন চ্যালেঞ্জ নিয়ে ইতিহাস রচনা করলেন তিনি। লাল-হলুদকে দেখিয়ে দিলেন ঠিকঠাক দল পেলে তিনি সাফল্য এনে দিতে পারেন।

রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।



Source link

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*